খোশখবর ডেস্কঃ ভারতের মতো গ্রীষ্ম মণ্ডলীয় বা গরমের দেশের মানুষ সারা বছর একটু ঠান্ডার খোঁজ করেন। শীতকাল কবে আসবে তা জানতে চান। এই মুহূর্তে শীতের রাজত্বই চলছে গোটা দেশ জুড়ে। হাড়কাঁপানো ঠান্ডায় কাঁপছে সমগ্র কাশ্মীর উপত্যকা। হিমাচল প্রদেশে চলছে তুষারপাত, সঙ্গে বৃষ্টি।কোথাও কোথাও তাপমাত্রা নেমে গেছে -৬.৫ ডিগ্রি থেকে -৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত।ঠান্ডায় কাঁপছে রাজধানী দিল্লিও।কিন্তু বিষয়টা হল এই ঠান্ডা আসলে কিছুই নয়। পৃথিবীর শীতলতম স্থানগুলোর কাছে এই ঠান্ডার হিসেব প্রায় গরমেরই নামান্তর।পৃথিবীর শীতলতম স্থান কোথায়? এজন্য অবশ্য আপনাকে প্রথমেই যেতে হবে বরফের দেশ অ্যান্টার্কটিকায়। পৃথিবী বিখ্যাত বিজ্ঞান পত্রিকা নিউ সায়েন্টিস্ট ডট কমের তথ্য অনুসারে প্রকাশ করা হল বিশ্বের সবচেয়ে ঠান্ডা ১০ জায়গার নাম।
১। পূর্ব অ্যান্টার্কটিক মালভূমি, অ্যান্টার্কটিকা
পূর্ব অ্যান্টার্কটিক মালভূমি পৃথিবীর শীতলতম স্থান।২০০৪ থেকে ২০১৬ সালের মধ্যে প্রায় অস্ট্রেলিয়ার আয়তনের সমান ডোম আর্গাস এবং ডোম ফুজি এলাকার স্যাটেলাইট ডেটা থেকে জানা যায় যে বাতাসের তাপমাত্রা প্রায় - ৯৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস।গবেষকরা মনে করেন যে জমির তাপমাত্রা - ৯৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন যে যদি এই দূর থেকে করা পরিমাপগুলি সঠিক হয় তবে এটিই হবে পৃথিবীর সবচেয়ে ঠান্ডা জায়গা।
১। পূর্ব অ্যান্টার্কটিক মালভূমি, অ্যান্টার্কটিকা
পূর্ব অ্যান্টার্কটিক মালভূমি পৃথিবীর শীতলতম স্থান।২০০৪ থেকে ২০১৬ সালের মধ্যে প্রায় অস্ট্রেলিয়ার আয়তনের সমান ডোম আর্গাস এবং ডোম ফুজি এলাকার স্যাটেলাইট ডেটা থেকে জানা যায় যে বাতাসের তাপমাত্রা প্রায় - ৯৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস।গবেষকরা মনে করেন যে জমির তাপমাত্রা - ৯৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন যে যদি এই দূর থেকে করা পরিমাপগুলি সঠিক হয় তবে এটিই হবে পৃথিবীর সবচেয়ে ঠান্ডা জায়গা।
২। ভস্তক স্টেশন, অ্যান্টার্কটিকা
পৃথিবীর শীতলতম স্থান হিসেবে অ্যান্টার্কটিকার ভস্তক স্টেশনকেই মানা হয়। এটি একটি রাশিয়ান গবেষণা কেন্দ্র, যেখানে ২১ জুলাই ১৯৮৩ সালে ইতিহাসের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল।যা ছিল -৮৯.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ভস্তক গবেষণা কেন্দ্রটি ১৯৫৭ সালে সোভিয়েত ইউনিয়ন তৈরি করেছিল। এটি অ্যান্টার্কটিকার কেন্দ্রে, সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ৩,৪৮৮ মিটার উচ্চতায় অবস্থিত। এর সঙ্গে স্থায়ী তুষার এবং শুষ্ক আবহাওয়া মিলিত হয়ে এটিকে পৃথিবীর অন্যতম শীতলতম স্থানে পরিণত করেছে। এটি পৃথিবীর সবচেয়ে শুষ্ক স্থানগুলির মধ্যে একটি, বছরে প্রায় ২০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়, যার পুরোটাই তুষার বা বরফ।
৩। অ্যামন্ডসেন-স্কট স্টেশন, অ্যান্টার্কটিকা
দক্ষিণ মেরুতে অবস্থিত এই স্টেশনটি ১৯৫৬ সালে নির্মাণ করা হয়। এখানে গ্রীষ্মকালে ছ’ মাসের সূর্যালোক এবং শীতকালে ছ’ মাসের পূর্ণ অন্ধকার থাকে। ২০১১ সালের বড়দিনে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা -১২.৩°C রেকর্ড করা হয়েছিল, আর সর্বনিম্ন তাপমাত্রা -৮২.৮°C রেকর্ড করা হয়েছিল ১৯৮২ সালের জুন মাসে।
আরও পড়ুনঃ
প্রতীকী ছবি |
৪। ডেনালি, আলাস্কা, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র
ডেনালি, পূর্বে মাউন্ট ম্যাককিনলি নামে পরিচিত, উত্তর আমেরিকার সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে এর উচ্চতা ৬,০০০ মিটারের বেশি। গড় তাপমাত্রা -১০°C হলেও ১৯৫০ থেকে ১৯৬৯ সালের মধ্যে এখানে -৭৩°C রেকর্ড করা হয়েছিল।
৫। ক্লিঙ্ক স্টেশন, গ্রিনল্যান্ড
ক্লিঙ্ক ওয়েদার স্টেশন আর্কটিক অঞ্চলের সবচেয়ে শীতল স্থান হিসেবে রেকর্ড করেছে। ১৯৯১ সালের ডিসেম্বরে এখানে তাপমাত্রা -৬৯.৬°C-এ নেমেছিল। এই ঠান্ডা তাপমাত্রা সত্ত্বেও, গ্রিনল্যান্ডের বেশিরভাগ বরফ দ্রুত গলে যাচ্ছে। বিজ্ঞানীরা এর জন্যে গ্রিন হাউস এফেক্টকেই দায়ী করছেন।
৬। ওইমায়াকন, সাইবেরিয়া, রাশিয়া
ওইমায়াকন পৃথিবীর সবচেয়ে ঠান্ডা স্থায়ীভাবে বসবাসযোগ্য স্থান। ১৯৩৩ সালে এখানে -৬৭.৭°C তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়।এখানকার জনসংখ্যা ৫০০র নিচে। মজার কথা হল -৫৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের চেয়ে বেশি ঠান্ডা পড়লে বন্ধ করে দেওয়া হয় স্থানীয় স্কুল,যা শীতকালে গড় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা হতে পারে।
৭। নর্থ আইস, গ্রিনল্যান্ড
১৯৫০ সালে ব্রিটিশ নর্থ গ্রিনল্যান্ড অভিযানের সময় প্রতিষ্ঠিত এই স্টেশনটি ১৯৫৪ সালে -৬৬.১°C রেকর্ড করেছিল।১৯৫০-এর দশকে ব্রিটিশ উত্তর গ্রিনল্যান্ড অভিযানের সময় স্থাপিত এই গবেষণা কেন্দ্রটি সেই সময়ে উত্তর আমেরিকায় রেকর্ড কম তাপমাত্রা ছিল।
৮। ইয়াকুতস্ক, সাইবেরিয়া, রাশিয়া
ইয়াকুতস্ক পৃথিবীর অন্যতম শীতল শহর। ১৮৯১ সালে এখানে -৬৪.৪°C তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল।ইয়াকুটস্ক পৃথিবীর শীতলতম শহরগুলির মধ্যে একটি এবং পারমাফ্রস্টে অবস্থিত। যদিও এই অঞ্চলে গরম পড়ার অভিজ্ঞতাও রয়েছে। ২০১১ সালে তাপমাত্রা ৩৮.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত পৌঁছেছিল। লেনা নদীর ধারে অবস্থিত, শীতের মাসগুলিতে এটি প্রায়শই যথেষ্ট ঠাণ্ডা থাকে, নদীটি বরফ হয়ে যায় এবং রাস্তা হিসাবে ব্যবহার করা যায়।
১৯৪৭ সালে স্নাগ গ্রামে তাপমাত্রা -৬২.৮°C রেকর্ড করা হয়েছিল। ১৯৪৭ সালে, উত্তর-পশ্চিম কানাডার ইউকনের ছোট গ্রাম স্নাগে প্রায় ১০ জন লোকের বাড়ি ছিল। গ্রামটিকে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় জরুরী অবতরণ স্ট্রিপ হিসাবে এবং পরে আবহাওয়া স্টেশন হিসাবে ব্যবহার করা হয়। যেখানে তাপমাত্রা -৬২.৮°C পর্যন্ত রেকর্ড করা হয়েছিল।
১০। প্রস্পেক্ট ক্রিক, আলাস্কা, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র
ট্রান্স-আলাস্কা পাইপলাইন সিস্টেম নির্মাণের সময় গঠিত এই গ্রামে ১৯৭১ সালের জানুয়ারিতে -৬২.১°C তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়।১৯৭০ এর দশকের শেষের দিকে ট্রান্স-আলাস্কা পাইপলাইন সিস্টেমের শ্রমিকদের জন্য একটি বসতি হিসাবে নির্মিত হওয়া গ্রামটি এখন কার্যত নির্জন। ১৯৭১ সালের জানুয়ারিতে, তাপমাত্রা -৬২.১°C ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছিল।
[ছবি সৌজন্যঃ খোশখবর সাইটে ব্যবহৃত ছবিগুলি নেওয়া হয়েছে পিক্সাবে, আনস্প্ল্যাস, ফ্রিপিক, উইকিমিডিয়া কমন্স, গুগল ফটো সহ বিভিন্ন নিজস্ব সূত্র থেকে]
[ জ্ঞান বা তথ্যের কোনও কপিরাইট হয় বলে আমরা মনে করি না। পৃথিবীর বুকে প্রকাশিত অগুনতি বই, লাইব্রেরিতে ঠাসা সমুদ্র সমান জ্ঞান, অন্তর্জালে ছড়িয়ে থাকা আকাশ সমান তথ্য থেকে দু-একটি তুলে এনে পাঠকদের সামনে রাখাই এই ব্লগসাইটের কাজ। তবে জ্ঞানত কোনও ভুল,বিকৃত বা অন্ধ ভাবনার তথ্য প্রকাশ করবে না ‘খোশখবর’।]
0 মন্তব্যসমূহ