একনজরে

10/recent/ticker-posts

Forest bathing আপনাকে পাল্টে দেবে ‘ফরেস্ট বাথিং’, একবার করেই দেখুন না!

Forest bathing আপনাকে পাল্টে দেবে ‘ফরেস্ট বাথিং’, একবার করেই দেখুন না!

খোশখবর ডেস্কঃ আপনি কী প্রকৃতির ছোঁয়া থেকে অনেক দূরে থাকেন? আপনার কী মন ভাল নেই? বিরক্ত? সারাদিন ডিজিটাল জগতে ঘুরে বেড়ান? শহরের সারি সারি সৈনিকের মত দাঁড়িয়ে থাকা ইট-কাঠ আর পাথরের হাইরাইজ বিল্ডিংয়ের জঙ্গল থেকে একছুট্টে পালিয়ে যেতে ইচ্ছে করছে? সমুদ্র বা পাহাড় নয়, আপনাকে কী হাতছানি দিয়ে ডাকছে কোনও সবুজ জঙ্গল,গাছপালা? তাহলে বলাই যায় আপনার মন চাইছে ফরেস্ট বাথিং।যে স্নান আপনাকে দেবে নির্মল আনন্দ,একটা সতেজ মন আর অনেকটা ভাললাগা।যেখানে প্রকৃতির স্পর্শ পেলে মন সতেজ হয়ে যায় নিমিষে, জীবনীশক্তি ফিরে আসে নতুনভাবে। জাপানি ভাষায় এর নাম দেওয়া হয়েছে 'শিনরিন ইয়োকু'।এর ইংরেজি অর্থ হল 'ফরেস্ট বাথিং'।

আরও পড়ুনঃ


আপনাকে পাল্টে দেবে ‘ফরেস্ট বাথিং’, একবার করেই দেখুন না!

ফরেস্ট বাথিং ব্যাপারটা কী?

ফরেস্ট বাথিং হলো প্রকৃতির মাঝে সময় কাটানোর একটি বিশেষ ধরণ, যা মূলত জাপানের ‘শিনরিন-ইয়োকু’ (Shinrin-Yoku) ধারণা থেকে এসেছে। এর মূল লক্ষ্য হল জঙ্গল বা বনভূমির মাঝে হাঁটাহাঁটি বা সময় কাটানোর মাধ্যমে প্রকৃতির সঙ্গে মানসিক এবং শারীরিকভাবে সংযুক্ত হওয়া। ‘ফরেস্ট বাথিং’ শব্দটি বাস্তবিক কোনও স্নানের সঙ্গে সম্পর্কিত নয়, এটি প্রকৃতির মধ্যে গভীরভাবে নিমগ্ন হওয়ার প্রতীক।

আপনাকে পাল্টে দেবে ‘ফরেস্ট বাথিং’, একবার করেই দেখুন না!

কেমন করে কাজে লাগে 'ফরেস্ট বাথিং'?

সোজা কথায় ‘ফরেস্ট বাথিং’ হল প্রকৃতির সঙ্গে আপনার মনের সংযোগ।আপনার ইন্দ্রিয়গুলোর মাধ্যমে পরিবেশকে উপলব্ধি করা।যেমন গাছের গন্ধ নেওয়া, পাখির ডাক শোনা, পাতার নড়াচড়া দেখা ইত্যাদি।ফরেস্ট বাথিং কোনো ব্যায়াম, হাইকিং, বা জগিং নয়। এটি কেবল প্রকৃতির সঙ্গে আমাদের দৃষ্টি, শ্রবণ, স্বাদ, ঘ্রাণ এবং স্পর্শের ইন্দ্রিয়ের মাধ্যমে সংযোগ করে দেয়। ইন্দ্রিয়গুলোর মাধ্যমে প্রকৃতি ও আমাদের মধ্যে থাকা ব্যবধানকে সেতুর মাধ্যমে একত্রিত করে। যার জন্য প্রয়োজন গাছগাছালির নির্জনতা৷ এটা কোনো কসরতের মতো নয়, বরং ধীর এবং শান্তভাবে প্রকৃতির সৌন্দর্য অনুভব করার অভিজ্ঞতা।


Forest bathing আপনাকে পাল্টে দেবে ‘ফরেস্ট বাথিং’, একবার করেই দেখুন না!

ফরেস্ট বাথিং কী বনে গিয়েই সম্ভব?

মনে রাখতে হবে ফরেস্ট বাথিংয়ের জন্য বন বা জঙ্গলেই যেতে হবে তা কিন্তু নয়। গাছের ছায়া আছে, প্রকৃতির স্পর্শ আছে এমন কোনো পরিবেশ পেলেই আপনি ফরেস্ট বাথিং করতে পারেন। আসলে এ হল প্রকৃতির মাঝে নিজের উপস্থিতি অনুভব করা এবং প্রতিটি মুহূর্তকে উপভোগ করা। সেখানে গিয়ে আরামদায়ক জায়গায় কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিন, জোরে জোরে শ্বাস নিন।বন-জঙ্গলে যাওয়ার সুযোগ না পেলে, শহরের পার্কে ফরেস্ট বাথিং করা যেতে পারে।যার জন্য প্রয়োজন গাছগাছালির নির্জনতা আর নিজস্ব মনন।ফরেস্ট বাথিং এমন একটি অভ্যাস যা সহজেই মানসিক শান্তি এবং শারীরিক সুস্থতা আনতে সাহায্য করে। এটি প্রাকৃতিক চিকিৎসার মতোই কাজ করে।

Forest bathing আপনাকে পাল্টে দেবে ‘ফরেস্ট বাথিং’, একবার করেই দেখুন না!

কিভাবে করবেন ফরেস্ট বাথিং?

কাছাকাছি কোনো বন, পার্ক বা প্রকৃতির স্থানে যান।ফোন বন্ধ রাখুন বা সাইলেন্টে রাখুন। ধীরে হাঁটুন এবং আপনার চারপাশের প্রকৃতি মন দিয়ে দেখুন, শুনুন, এবং অনুভব করুন।কোনো তাড়াহুড়ো করবেন না।প্রকৃতির সৌন্দর্য গ্রহণ করতে সময় নিন।ফরেস্ট বাথিং এমন একটি অভ্যাস যা সহজেই মানসিক শান্তি এবং শারীরিক সুস্থতা আনতে সাহায্য করে।এটি প্রাকৃতিক চিকিৎসার মতোই কাজ করে।রোদ, বৃষ্টি যেকোনো সময় ফরেস্ট বাথিং করা যায়৷ এজন্য প্রথমে গাছগাছালি ঘেরা নিরিবিলি জায়গা খুঁজে বের করুন। আপনাকে ছুঁয়ে যাওয়া বাতাস অনুভব করুন। পাখির ডাক পোকামাকড়ের গুঞ্জন কী বলতে চায় শুনুন,প্রকৃতিকে অনুভব করুন ।চোখ খুলে আপনার চারপাশের রঙগুলো দেখুন। আঙ্গুল দিয়ে গাছের ডালপালা, খাঁজগুলো স্পর্শ করুন,বসুন।গভীরভাবে শ্বাস নিন, ঘ্রাণের স্বাদ বদলাতে গাছের গন্ধ নিন। মাটির ছোঁয়া পেতে জুতো খুলে কিছুক্ষণ হাঁটুন বা দৌড়ে বেড়ান। অনেকটা হালকা লাগবে নিজেকে। কোনো তাড়াহুড়ো করবেন না।প্রকৃতির সৌন্দর্য গ্রহণ করতে সময় নিন।

Forest bathing আপনাকে পাল্টে দেবে ‘ফরেস্ট বাথিং’, একবার করেই দেখুন না!

ফরেস্ট বাথিংয়ের মূল উপাদানঃ

প্রকৃতির সঙ্গে সংযোগ: আপনার ইন্দ্রিয়গুলোর মাধ্যমে পরিবেশকে উপলব্ধি করা। যেমন গাছের গন্ধ নেওয়া, পাখির ডাক শোনা, পাতার নড়াচড়া দেখা ইত্যাদি।

ধীর গতি: এটা কোনো কসরতের মতো নয়, বরং ধীর এবং শান্তভাবে প্রকৃতির সৌন্দর্য অনুভব করার অভিজ্ঞতা।

প্রযুক্তি থেকে বিরত থাকা: মোবাইল, ইন্টারনেট বা অন্যান্য প্রযুক্তিগত ডিভাইস থেকে দূরে থাকা।

মনযোগ এবং সচেতনতা: প্রকৃতির মাঝে নিজের উপস্থিতি অনুভব করা এবং প্রতিটি মুহূর্তকে উপভোগ করা।


Forest bathing আপনাকে পাল্টে দেবে ‘ফরেস্ট বাথিং’, একবার করেই দেখুন না!


ফরেস্ট বাথিংয়ের এর উপকারিতাঃ

মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি: উদ্বেগ ও মানসিক চাপ কমায়।

শারীরিক স্বাস্থ্যের উন্নতি: রক্তচাপ কমানো, হৃদ্‌স্বাস্থ্য ভালো রাখা এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।

মনোযোগ বৃদ্ধি: মনোযোগ কেন্দ্রীভূত করা এবং সৃজনশীলতা বাড়ায়।

ঘুমের মান উন্নত করে: মানসিক শান্তি পাওয়ার কারণে ঘুম ভালো হয়। 
ছবি সৌজন্যঃ পিক্সাবে   


[ছবি সৌজন্যঃ খোশখবর সাইটে ব্যবহৃত ছবিগুলি নেওয়া হয়েছে পিক্সাবে, আনস্প্ল্যাস, ফ্রিপিক, উইকিমিডিয়া কমন্স, গুগল ফটো সহ বিভিন্ন নিজস্ব সূত্র থেকে]

[ জ্ঞান বা তথ্যের কোনও কপিরাইট হয় বলে আমরা মনে করি না। পৃথিবীর বুকে প্রকাশিত অগুনতি বই, লাইব্রেরিতে ঠাসা সমুদ্র সমান জ্ঞান, অন্তর্জালে ছড়িয়ে থাকা আকাশ সমান তথ্য থেকে দু-একটি তুলে এনে পাঠকদের সামনে রাখাই এই ব্লগসাইটের কাজ। তবে জ্ঞানত কোনও ভুল,বিকৃত বা অন্ধ ভাবনার তথ্য প্রকাশ করবে না ‘খোশখবর’।]  

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ

Ad Code