খোশখবর ডেস্কঃ প্রতিবছর কালিপুজোর সময় বাঙালি মেতে ওঠে 'ভূত চতুর্দশী' পালনে।কার্তিক মাসের কৃষ্ণপক্ষের চতুর্দশী তিথিতে পালিত হয় নরক চতুর্দশী বা ভূত চতুর্দশী।একইরকম ভাবে ফি বছর ৩১ অক্টোবর বিশ্বজুড়ে পালিত হয় ‘হ্যালোউইন উৎসব’ – যা সাহেবদের ভূত উৎসব বলে খ্যাত।খাতায় কলমে ভূত বলে কিছু না থাকলেও ভূতেদের নিয়ে পৃথিবীর দুই প্রান্তে এমন উন্মাদনা কেন জেনে নেওয়া যাক সেটাই।
আরও পড়ুনঃ
'ভূত চতুর্দশী' ব্যাপারটা কী?
ভূত চতুর্দশী হল হিন্দু ধর্মের একটা তিথি।অনেকে বলেন, ভূত চতুর্দশীর দিন কোনও পরিবারের চৌদ্দ পুরুষের আত্মারা নিজের নিজের বাড়িতে নেমে আসেন।শাস্ত্রমতে বলা হয়,এই তিথিতে সন্ধ্যা নামার পর পরই সব অশরীরী ভূতেরা (প্রেতাত্মারা) বের হয়ে আসে।আর এই সব তাদের হাত থেকে নিস্তার পেতে সন্ধ্যায় পর গৃহস্থের বাড়িতে ১৪টি প্রদীপ জ্বালানোর নিয়ম।অর্থাৎ এই অশুভ শক্তির থেকে মুক্তির উদ্দেশ্যেই জ্বালানো হয় চোদ্দ প্রদীপ।বিশ্বাস এই চোদ্দ প্রদীপের আলো সংসারে সকল প্রকার অশুভ শক্তির অবসান ঘটাবে।এই তিথিতে চোদ্দ প্রকার শাক( চোদ্দ শাক) খাওয়ার চলও রয়েছে।
আবার আর একটি মত হল,এই দিনে ‘চামুণ্ডা’ রূপে চৌদ্দ ভূত নিয়ে ভক্তদের বাড়ি থেকে অশুভ শক্তি দূর করতে নেমে আসেন মা কালী।সেই কালী ঠাকুরকে স্বাগত জানাতেই নাকি প্রদীপ জ্বালানোর ব্যবস্থা করা হয়।আর একটি মত হল এই তিথিতে দৈত্যরাজ বলি পৃথিবীতে পুজো নিতে আসেন। তাঁর সঙ্গে আসে নানা অশুভ শক্তি, ভূত এবং প্রেতাত্মারা।তবে ব্যাপারটা যাই হোক ভূত চতুর্দশীর সঙ্গে জড়িয়ে আছে ভূত, প্রেতাত্মার ভাবনা।
আরও পড়ুনঃ
‘হ্যালোউইন’ ব্যাপারটা কী?
আমাদের ‘ভূত চতুর্দশী’ পালনের মতই এটা সাহেবদের এক রীতি।এই উৎসবের উৎপত্তিস্থল আয়ারল্যান্ড, স্কটল্যান্ড হলেও কয়েক শতাব্দী ধরে ধীরে ধীরে তা ছড়িয়ে পড়েছে ইউরোপ, আমেরিকা সহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে।এখন এশিয়ার বিভিন্ন দেশের পাশাপাশি ভারত বাংলাদেশেও বিভিন্ন জায়গায় ঘটা করে পালিত হয় সাহেবদের ভূতের উৎসব। হ্যালোউইনের ইতিহাস জানতে গেলে আমাদের যেতে হবে প্রায় ২০০০ বছর পিছনে। আজকের আয়ারল্যান্ড,ব্রিটেন,উত্তর ফ্রান্সে তখন বাস করত কেল্টিক সম্প্রদায়ের মানুষ। বছরের প্রথম দিনে তাদের ফসল কাটার অনুষ্ঠান বা সামহেন থেকে হলোউইনের উৎপত্তি। কেল্টিক ক্যালেন্ডার অনুযায়ী বছরের প্রথম দিন ১লা নভেম্বর।
এই সম্প্রদায়ের মানুষ বিশ্বাস করতেন বছরের শেষ দিন অর্থাৎ ৩১ অক্টোবর রাতে মৃত ব্যাক্তিদের আত্মারা জীবিতদের সমস্যায় ফেলতে পৃথিবীতে নেমে আসে।এই অশুভ আত্মাদের তাড়ানোর জন্য জীবিতরা ভূতের মতো পোশাক পরেন, যত্রতত্র আগুন জ্বালিয়ে বন ফায়ারের আয়োজন করা হয়। বাড়ি,হোটেল বা অন্যকোথাও নানারকম ভয়ঙ্কর ভৌতিক পরিবেশ সৃষ্টি করে নানারকম ভৌতিক সাজে সেজে এই মজার উৎসব পালন করা হয়।
হ্যালোউইন ডে উদযাপনে নজর কাড়ে বড় বড় কুমড়োর ব্যবহার।ফাঁপা কুমড়োর মধ্যে চোখ, নাক এবং মুখ খোদাই করে তার মধ্যে মোমবাতি জ্বালিয়ে এক ধরনের লন্ঠন তৈরি করা হয়। প্রাচীনকালে ফসল কাটার সময় প্রচুর কুমড়ো পাওয়া যেত বলেই হ্যালোউইনের সঙ্গে কুমড়োর ব্যবহার জড়িয়ে গেছে বলে মনে করা হয়।
(তথ্য www.khoshkhobor.in)
[ছবি সৌজন্যঃ খোশখবর সাইটে ব্যবহৃত ছবিগুলি নেওয়া হয়েছে পিক্সাবে, আনস্প্ল্যাস, ফ্রিপিক, উইকিমিডিয়া কমন্স, গুগল ফটো সহ বিভিন্ন নিজস্ব সূত্র থেকে]
[ জ্ঞান বা তথ্যের কোনও কপিরাইট হয় বলে আমরা মনে করি না। পৃথিবীর বুকে প্রকাশিত অগুনতি বই, লাইব্রেরিতে ঠাসা সমুদ্র সমান জ্ঞান, অন্তর্জালে ছড়িয়ে থাকা আকাশ সমান তথ্য থেকে দু-একটি তুলে এনে পাঠকদের সামনে রাখাই এই ব্লগসাইটের কাজ। তবে জ্ঞানত কোনও ভুল,বিকৃত বা অন্ধ ভাবনার তথ্য প্রকাশ করবে না ‘খোশখবর’।]
0 মন্তব্যসমূহ