উইন্ডো ডিসপ্লে ডিজাইনার হিসাবে কাজ করার সময়ই শিনাসির মাথায় আসে ‘ক্যাট-আই’ ফ্রেম তৈরির ভাবনা
খোশখবর ডেস্কঃ হার্লেকুইন বা ক্যাট-আই চশমাই একটা সময় অপ্রতিরোধ্য ফ্যাশন অনুষঙ্গ হয়ে উঠেছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মহিলাদের মধ্যে।আর এই বিড়ালচোখো চশমার ছকভাঙা ডিজাইনের পিছনে ছিলেন আমেরিকান শিল্পী, ডিজাইনার এবং আবিষ্কারক আলটিনা শিনাসি।যে কোনও শিল্পকর্মে গাঢ় রঙের ভাবনা ও জ্যামিতিক নকশা ফুটিয়ে তুলে বিমূর্ত রূপ দিতে পারতেন শিনাসি।রঙ এবং টেক্সচার ব্যবহার করে আকর্ষণীয় এবং গতিশীল ডিজাইন তৈরি করতে তিনি পারদর্শী ছিলেন।আদি আমেরিকান শিল্প, আফ্রিকান শিল্প এবং আধুনিক শিল্পের মিশ্রনে গড়ে উঠত তাঁর কাজ।শিনাসির কাজ এতটাই প্রভাব বিস্তার করেছিল যে তাকে ২০শতকের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ টেক্সটাইল ডিজাইনারদের একজন বলে মনে করা হয়।
শিনাসির জন্ম ১৯০৭ সালের ৪ অগস্ট নিউ ইয়র্কের ম্যানহাটনে ।স্নাতক হওয়ার পর, শিনাসি চিত্রকলা শিখতে চলে যান প্যারিসে।মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ফিরে এসে তিনি যোগ দেন নিউ ইয়র্কের আর্ট স্টুডেন্টস লীগে।নিউ ইয়র্কের ফিফথ অ্যাভিনিউতে একাধিক দোকানে উইন্ডো ড্রেসার হিসাবে কাজ শুরু করেন।এই সময়ে তিনি সালভাদর ডালি, জর্জ গ্রোজের মতো বিশিষ্ট শিল্পীদের কাছেও কাজ শেখেন।
উইন্ডো ডিসপ্লে ডিজাইনার হিসাবে কাজ করার সময়ই শিনাসির মাথায় আসে ‘ক্যাট-আই’ ফ্রেম তৈরির ভাবনা।কার্নিভালে বা উৎসবের সময় ইতালির ভেনিসে লোকেদের পরা হারলেকুইন মুখোশের আকৃতির অনুকরণ করেই তিনি এই চশমার ফ্রেম তৈরি করেন।এই চশমার ডিজাইন দ্রুত প্রচার পায় এবং শিনাসি ব্যাপক খ্যাতি অর্জন করেন।১৯৩০-এর দশকের শেষের দিকে এবং ১৯৪০-এর দশকে, হারলেকুইন চশমা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মহিলাদের মধ্যে একটি অপ্রতিরোধ্য ফ্যাশন অনুষঙ্গ হয়ে ওঠে। শিনাসি তার উদ্ভাবনের জন্য ১৯৩৯ সালে লর্ড এবং টেলর আমেরিকান ডিজাইন পুরস্কারে ভূষিত হন।সেই সময়ের বিখ্যাত ভোগ এবং লাইফ সহ বিভিন্ন ম্যাগাজিনে শিনাসির কাজ নিয়ে ব্যাপক চর্চা শুরু হয়।
তবে শিনাসি শুধুমাত্র প্রতিষ্ঠিত এবং সফল শিল্পী বা ডিজাইনারই ছিলেন না, তিনি চলচ্চিত্র জগতেও প্রতিভার প্রমাণ দেন।১৯৬০ সালে, তিনি বিখ্যাত শিল্পী এবং তার প্রাক্তন শিক্ষক জর্জ গ্রোসকে নিয়ে একটি ডকুমেন্টারি তৈরি করেন যার শিরোনাম ছিল জর্জ গ্রোজ' ইন্টারেগনাম। এটি একটি একাডেমি পুরস্কারের জন্য মনোনীত হয় এবং ভেনিস চলচ্চিত্র উৎসবে প্রথম স্থান অর্জন করে।১৯৯৫ সালে স্মৃতিকথা ‘দ্য রোড আই হ্যাভ ট্রাভেলড’-এ তিনি তুলে ধরেন তাঁর দীর্ঘ পথ চলার গল্প।মৃত্যু ১৯৯৯ সালের এই অগস্ট মাসেরই ১৯ তারিখে। সূচনার প্রায় ১০০ বছর পরেও প্রাসঙ্গিক, ফ্যাশন দুনিয়ায় ঝড় তোলা হার্লেকুইন ডিজাইনের সেই স্বপ্নদর্শী মহিলাকে ডুডলের মাধ্যমে স্যালুট জানাল গুগল।
[ছবি সৌজন্যঃ খোশখবর সাইটে ব্যবহৃত ছবিগুলি নেওয়া হয়েছে পিক্সাবে, আনস্প্ল্যাস, ফ্রিপিক, উইকিমিডিয়া কমন্স, গুগল ফটো সহ বিভিন্ন নিজস্ব সূত্র থেকে]
[ জ্ঞান বা তথ্যের কোনও কপিরাইট হয় বলে আমরা মনে করি না। পৃথিবীর বুকে প্রকাশিত অগুনতি বই, লাইব্রেরিতে ঠাসা সমুদ্র সমান জ্ঞান, অন্তর্জালে ছড়িয়ে থাকা আকাশ সমান তথ্য থেকে দু-একটি তুলে এনে পাঠকদের সামনে রাখাই এই ব্লগসাইটের কাজ। তবে জ্ঞানত কোনও ভুল,বিকৃত বা অন্ধ ভাবনার তথ্য প্রকাশ করবে না ‘খোশখবর’।]
0 মন্তব্যসমূহ