মায়ের প্রতি গভীর ভালবাসা,মিনি তাজমহল গড়লেন তামিলনাড়ুর ব্যবসায়ী আমরুদিন শেখ দাউদ।
খোশখবর ডেস্কঃ পৃথিবীর বুকে প্রেম আর ভালবাসার প্রতীক হিসেবেই স্থান পেয়েছে বিশ্বের সাত আশ্চর্যের অন্যতম আগ্রার তাজমহল। স্ত্রী মমতাজের স্মৃতিতে এই আশ্চর্য মাস্টারপিস তৈরি করেছিলেন মুঘল সম্রাট শাহজাহান। এবার মৃত মায়ের প্রতি গভীর ভালবাসা প্রকাশ করতে মিনি তাজমহল গড়ে ফেললেন তামিলনাড়ুর ব্যবসায়ী আমরুদিন শেখ দাউদ। এই ছোট মহল তৈরি করতে খরচ হয়েছে প্রায় ৫ কোটি টাকা।
ব্যবসায়ী আমরুদিন শেখ দাউদের বসবাস তামিলনাড়ুর তিরুভারুর শহরে।চেন্নাই শহরে তাঁর হার্ডওয়্যারের ব্যবসা। বাবা আব্দুল কাদের শেখ দাউদ ছিলেন চেন্নাই-ভিত্তিক ব্যবসায়ী, যিনি চামড়াজাত পণ্যের ব্যবসা করতেন।পাঁচ ভাইবোনের মধ্যে দাউদ একমাত্র পুরুষ। আব্দুল কাদের শেখ যখন মারা যান তখন তাঁর সন্তানরা খুব ছোট ছিলেন।
এই সংকটের সময়ে শক্ত হাতে সংসারের হাল ধরেন দাউদদের মা জেলানী বিবি। তিনি ছিলেন একজন সহনশীল মহিলা। অসংখ্য চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েও পারিবারিক ব্যবসা চালানোর পাশাপাশি চার কন্যা সহ তার পাঁচ সন্তানকে লালন-পালনের মাধ্যমে বড় করে তোলেন। চার বোনের বিয়ের পাশাপাশি গাঁটছড়া বাঁধেন আমরুদিন শেখ নিজেও।
আমরুদিনের নিজের ব্যবসা দাঁড় করানোর পেছনেও রয়েছে জেলানী বিবির হাত।ছেলেকে ব্যবসা দোকান গড়ে তুলতে সাহায্য করেন তাঁর মা। ২০২০ সালে এক অমাবস্যার দিনে তিনি মারা যান।পাশে সবসময় থাকায় মায়ের মৃত্যু বড় ধাক্কা দেয় শেখ দাউদকে।যেহেতু অমাবস্যার দিনে মায়ের মৃত্যু তাই প্রতি অমাবস্যায় ১০০০ জন মানুষকে বিনামূল্যে বিরিয়ানি খাওয়ানোর সিদ্ধান্ত নেন তিনি।
কিন্তু তাতেও মায়ের জন্য কিছু করা হয় নি বা ঋণশোধ সম্পূর্ণ হয় নি বলেই মনে হচ্ছিল দাউদের।তখনই মায়ের স্মৃতিতে ক্ষুদ্রাকৃতি তাজমহল তৈরির কথা মাথায় আসে তাঁর।পৈতৃক গ্রাম আম্মায়িয়াপ্পানে এক একর জমি কিনে নির্মাতা এক বন্ধুর সহায়তায় এই স্মৃতিস্তম্ভের নির্মাণ শুরু করেন। আগ্রার তাজমহলের প্রতিলিপি হিসেবে গড়ে তুলতে আমরুদিন রাজস্থান থেকে মার্বেল পাথর নিয়ে আসেন।স্মৃতিস্তম্ভের চারপাশে জায়গা এবং হাঁটার পথও তৈরি করিয়েছেন তিনি।গত ২রা জুন সব ধর্মের, সব মানুষের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে এই মিনি তাজমহল।
অসাধারণ এই নির্মাণ ইতিমধ্যেই গোটা তামিলনাড়ু রাজ্যের মানুষকে আকর্ষণ করেছে। অনেকেই বলছেন এটা ‘দক্ষিণের তাজমহল’।তবে এমন কাজের জন্য ঢাকঢোল পিটিয়ে প্রচারে নামেন নি দাউদ।লোকমুখেই ছড়িয়ে পড়েছে তাঁর এমন কীর্তির কথা।
[ছবি সৌজন্যঃ খোশখবর সাইটে ব্যবহৃত ছবিগুলি নেওয়া হয়েছে পিক্সাবে, আনস্প্ল্যাস, ফ্রিপিক, উইকিমিডিয়া কমন্স, গুগল ফটো সহ বিভিন্ন নিজস্ব সূত্র থেকে]
[ জ্ঞান বা তথ্যের কোনও কপিরাইট হয় বলে আমরা মনে করি না। পৃথিবীর বুকে প্রকাশিত অগুনতি বই, লাইব্রেরিতে ঠাসা সমুদ্র সমান জ্ঞান, অন্তর্জালে ছড়িয়ে থাকা আকাশ সমান তথ্য থেকে দু-একটি তুলে এনে পাঠকদের সামনে রাখাই এই ব্লগসাইটের কাজ। তবে জ্ঞানত কোনও ভুল,বিকৃত বা অন্ধ ভাবনার তথ্য প্রকাশ করবে না ‘খোশখবর’।]
0 মন্তব্যসমূহ