একনজরে

10/recent/ticker-posts

Thwaites Glacier গলে যাচ্ছে আন্টার্কটিকার দৈত্যাকার হিমবাহ,বাড়ছে পৃথিবীর বিপদ


বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন এই হিমবাহ পুরোপুরি গলে গেলে বিশ্বজুড়ে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা আধ মিটারের বেশি বেড়ে যেতে পারে।

খোশখবর ডেস্কঃ শেষের সেদিন কি তবে আসন্ন? জলবায়ু পরিবর্তনের জেরে গোটা পৃথিবীজুড়ে নানা প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও ঘটনাবলী মোটেই সুসংবাদ শোনাচ্ছে না বিজ্ঞানীদের। গোটা বিশ্বে জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বেড়েছে সমুদ্রের জলের ‍উষ্ণতা। আর এর জেরে ক্রমশ গলতে শুরু করেছে আন্টার্কটিকার দৈত্যাকার থোয়াইটস হিমবাহের অপেক্ষাকৃত দুর্বল বা নরম জায়গাগুলো। সম্প্রতি ব্রিটেনের ‘নেচার’ পত্রিকায় প্রকাশিত দুটি গবেষণাপত্রে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।

আরও পড়ুনঃ ৫৭ মিলিয়ন বছর আগে পৃথিবীতে ঘুরে বেড়াত জায়ান্ট পেঙ্গুইন



২০১৯ এবং ২০২০ সালে প্রায় ছ সপ্তাহ ধরে এই হিমবাহের পরিস্থিতি নিয়ে গবেষণা করেন ১৩ জন মার্কিন এবং ব্রিটিশ বিজ্ঞানীর একটি দল৷ আইসফিন নামে পরিচিত জলের নীচে চলাচল করতে পারে ‘আইসফিন’ নামের রোবটের সাহায্যে পরীক্ষার পাশাপাশি নানা তথ্য সংগ্রহ করেন তাঁরা। নেচারে প্রকাশিত গবেষণাপত্রে বলা হয়েছে আন্টার্কটিকার দৈত্যকার থোয়াইটস হিমবাহের নরম জায়গাগুলোতে অপেক্ষাকৃত গরম জল ঢুকে পড়ছে।এর ফলে হিমবাহের তাপমাত্রা বেড়ে গিয়ে তাকে গলে যেতে সাহায্য করছে। বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন এই হিমবাহ পুরোপুরি গলে গেলে বিশ্বজুড়ে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা আধ মিটারের বেশি বেড়ে যেতে পারে।


কিসের বিপদ,কেন বিপদ? 

আন্টার্কটিকার থোয়াইটস হিমবাহকে ‘ডুমস ডে গ্লেসিয়ার’ বা শেষের সে দিনের হিমবাহ বলেও ডাকা হয়। আন্টার্কটিকা হল পৃথিবীর দক্ষিণতম মহাদেশ । আন্টার্কটিক সার্কেল প্রায় সম্পূর্ণ দক্ষিণে অবস্থিত এবং দক্ষিণ মহাসাগর দিয়ে ঘেরা। আন্টার্কটিকা হল পঞ্চম বৃহত্তম মহাদেশ, আয়তনে অস্ট্রেলিয়ার প্রায় দ্বিগুণ। আন্টার্কটিকার বেশিরভাগ অংশই গড়ে ১.৯ কিলোমিটার পুরু বরফ দিয়ে ঘেরা।বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন বিশ্বের প্রায় ৭০% পরিস্কার জল এখানে বরফের আকারে জমে রয়েছে।কোনওভাবে যদি এই জমা বরফ গলে যায় তা হলে গোটা পৃথিবীর সমুদ্রপৃষ্টের উচ্চতা ৬০ মিটার বা ২০০ ফুট বেড়ে যাবে।     ( তথ্য – উইকিপিডিয়া ) 





গোটা আন্টার্কটিকা জুড়ে বেশ কয়েকটি হিমবাহ রয়েছে।তার মধ্যে অন্যতম থোয়াইটস হিমবাহ।পশ্চিমবঙ্গের মোট এলাকার দ্বিগুণেরও বেশি জায়গা জুড়ে রয়েছে এই হিমবাহ।এর আগে ২০১৯ সালে পৃথিবীর কক্ষপথে থাকা নাসার ‘আইসব্রিজ’ উপগ্রহের রাডারের পাঠানো ছবিতে এই হিমবাহের গভীরে বিশাল ফাটল ধরা পড়ে। একই ছবি পাঠায় ইতালি ও জার্মানির উপগ্রহের রাডারও। একটি গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয় বিজ্ঞান পত্রিকা ‘সায়েন্স অ্যাডভান্সেস’-এ। বিজ্ঞানীরা জানান বরফ গলে যাওয়ার ফলে ওই ফাটলের জন্ম হয়েছে। আর সুবিশাল হিমবাহের নীচে অত বড় ফাটল হিমবাহটিকে দ্রুত গলিয়ে দিতে পারে যা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। বিজ্ঞানীদের তথ্য উষ্ণায়নের জন্য সমুদ্রের জলস্তর গত এক দশকে যতটা উঠে এসেছে তার প্রায় ৪ শতাংশই হয়েছে থোয়াইটস হিমবাহর বরফ গলে যাওয়ার কারনে। 


এর আগে থোয়াইটস হিমবাহের গভীরের পরিস্থিতি নিয়ে বিজ্ঞানীদের কাছে কোনো তথ্য ছিল না। সে সম্পর্কে আরও বেশি তথ্য পাওয়ার জন্যই এই গবেষণা চালানো হয়েছিল।এই গবেষণার পেছনে খরচ হয়েছে প্রায় ৪ কোটি ৭ লক্ষ ইউরো। রোবট আইসফিনের দৌলতে ৫৮৭ মিটার গভীরে হিমবাহের ক্ষত কতটা ভয়াবহ,সে ধারণা পাওয়া গেল। 

[ছবি সৌজন্যঃ খোশখবর সাইটে ব্যবহৃত ছবিগুলি নেওয়া হয়েছে পিক্সাবে, আনস্প্ল্যাস, ফ্রিপিক, উইকিমিডিয়া কমন্স, গুগল ফটো সহ বিভিন্ন নিজস্ব সূত্র থেকে]

[ জ্ঞান বা তথ্যের কোনও কপিরাইট হয় বলে আমরা মনে করি না। পৃথিবীর বুকে প্রকাশিত অগুনতি বই, লাইব্রেরিতে ঠাসা সমুদ্র সমান জ্ঞান, অন্তর্জালে ছড়িয়ে থাকা আকাশ সমান তথ্য থেকে দু-একটি তুলে এনে পাঠকদের সামনে রাখাই এই ব্লগসাইটের কাজ।তবে জ্ঞানত কোনও ভুল,বিকৃত বা অন্ধ ভাবনার তথ্য প্রকাশ করবে না ‘খোশখবর’।] 

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ

Ad Code