রাউলিংয়ের হ্যারি পটার সিরিজের চূড়ান্ত কিস্তি প্রকাশের দিনে ৮.৩ মিলিয়ন কপি বা ঘন্টায় ৩৪৫,৮৩৩টি বই বিক্রি হয়েছিল।
খোশখবর ডেস্কঃ হু হু করে ঝড়ের বেগে বিক্রি হচ্ছে বই – আজকের দিনে এমন স্বপ্নও দেখতে পান না লেখকেরা। কলকাতার বাজারে সদ্য প্রকাশিত বই কয়েক হাজার কপি বিক্রি হলেই চই চই পড়ে যায়। সেখানে প্রকাশ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই বিক্রির নিরিখে গিনেস বুকে নাম তুলে ফেলেছে প্রিন্স হ্যারির আত্মজীবনীমূলক বই ‘স্পেয়ার’।রেকর্ড বুকের তথ্য বলছে বই প্রকাশ হওয়ার প্রথম দিনেই ব্রিটেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং কানাডায় ১.৪৩ মিলিয়ন কপি বিক্রি হয়ে যায়।অর্থাৎ একদিনে বিক্রি হয়েছে ১৪ লক্ষ ৪৩ হাজার কপি।
নিয়েলসনের পরিসংখ্যান অনুসারে শুধুমাত্র ব্রিটেনেই প্রথম সপ্তাহে এই বই বিক্রি হয়েছে ৪৬৭,১৮৩ কপি। আনুষ্ঠানিক প্রকাশের তারিখের বেশ কয়েক দিন আগে স্পেনে কিছু কপি বিক্রি হওয়ার পরে বইটির বেশিরভাগ কাহিনী ফাঁস হয়ে যায় – যা বইটির বিক্রি আরও বাড়িয়ে দেয় বলে মনে করছেন প্রকাশনার সঙ্গে যুক্ত মানুষজন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ‘স্পেয়ার’-এর দাম ছিল ৩৬ মার্কিন ডলার, আর ব্রিটেনে এর দাম ছিল ২৮ পাউন্ড। অনেক খুচরো বিক্রেতাই ৫০% ছাড়ে বিক্রি করেছে এ বই।
এর আগে সর্বকালের সবচেয়ে দ্রুত বিক্রিত নন-ফিকশন বই-এর এই রেকর্ড ছিল বারাক ওবামার চতুর্থ বই, ‘এ প্রমিজড ল্যান্ড’-এর। ২০২০ সালে এই বই প্রকাশের দিনেই ৮৮৭,০০০ (৮ লক্ষ ৮৭ হাজার) কপি বিক্রি হয়েছিল। প্রিন্স হ্যারি এবং বারাক ওবামার আগে দ্রুত বিক্রি হওয়া নন-ফিকশন বইয়ের শিরোনামটি মিশেল ওবামার দখলে ছিল। ২০১৮ সালে মিশেল ওবামার স্মৃতিকথা ‘বিকমিং’ প্রথম দিনে ৭২৫,০০০ কপি বিক্রি হয়েছিল।
আরও পড়ুনঃ না ছেপে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল কবি বায়রনের আত্মজীবনী, কেন?
আবার মিশেল ওবামার আগে, ২০০৪ সালে বিল ক্লিনটনের ‘মাই লাইফ’ ছিল সবচেয়ে দ্রুত রেকর্ড বিক্রি হওয়া বইয়ের তালিকায় – যা একদিনে ৪০০,০০০ কপি বিক্রি হয়েছিল। বিল ক্লিন্টনের আগে এই রেকর্ড ছিল স্ত্রী হিলারি ক্লিনটনের দখলে। ঠিক এক বছর আগে ‘লিভিং হিস্ট্রি’ শিরোনামে হিলারি ক্লিনটনের স্মৃতিকথা বিক্রি হয় ২০০,০০০ কপি।
আবার মিশেল ওবামার আগে, ২০০৪ সালে বিল ক্লিনটনের ‘মাই লাইফ’ ছিল সবচেয়ে দ্রুত রেকর্ড বিক্রি হওয়া বইয়ের তালিকায় – যা একদিনে ৪০০,০০০ কপি বিক্রি হয়েছিল। বিল ক্লিন্টনের আগে এই রেকর্ড ছিল স্ত্রী হিলারি ক্লিনটনের দখলে। ঠিক এক বছর আগে ‘লিভিং হিস্ট্রি’ শিরোনামে হিলারি ক্লিনটনের স্মৃতিকথা বিক্রি হয় ২০০,০০০ কপি।
জে কে রাউলিং |
তবে ফিকশন হলেও সামগ্রিকভাবে গোটা পৃথিবীতে সবচেয়ে দ্রুত বিক্রি হওয়া বইটি হল জে কে রাউলিংয়ের ‘হ্যারি পটার অ্যান্ড দ্য ডেথলি হ্যালোস’। এটা ছিল রাউলিংয়ের হ্যারি পটার সিরিজের চূড়ান্ত কিস্তি। ২০০৭ সালে ২১ শে জুলাই প্রকাশের দিনে ৮.৩ মিলিয়ন কপি বা ঘন্টায় ৩৪৫,৮৩৩টি বই বিক্রি হয়েছিল।
কিন্তু সব রেকর্ড ছাড়িয়ে কেন এত বিক্রি হল প্রিন্স হ্যারির বই। আসলে বই প্রকাশের আগে থেকেই ব্রিটিশ রাজপরিবারের অন্দরমহলের নানা বিতর্ক,কাহিনী,অজানা গল্প বলা এই বই যে বিপুল বিক্রি হবে তা জানাই ছিল। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম থেকে শুরু করে টেলিভিশন,সমালোচক থেকে সোশ্যাল মিডিয়া সর্বত্রই আলোচনার কেন্দ্রে ছিল হ্যারির এই বই। ‘স্পেয়ার’-এ পরিবার সম্পর্কে অনেক কথা রয়েছে, সেসবের অনেককিছুই প্রকাশ করার ইচ্ছা না থাকা সত্ত্বেও তিনি তা প্রকাশ করেছেন বলে জানিয়েছেন প্রিন্স হ্যারি। পাশাপাশি অনেক তথ্য গোপন করেছেন বলে জানিয়েছেন হ্যারি। ছোটবেলায় মা ডায়নাকে হারানো, ভাই প্রিন্স উইলিয়াম এবং বাবা রাজা তৃতীয় চালর্সের সঙ্গে সম্পর্কের কথা স্থান পেয়েছে এই বইয়ে। আর এসবের জেরে প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গেই চর চর করে চড়েছে বইয়ের বিক্রি। প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গেই তা গড়ে ফেলে রেকর্ড।
হ্যারির জবানন্দিতে এই বই লিখেছেন বিখ্যাত পুলিৎজার পুরস্কার জয়ী মার্কিন লেখক,ঔপন্যাসিক ও সাংবাদিক জে আর মোরিনার। পুলিৎজার পুরস্কার জয়ী মেরিনার এর আগে টেনিস কিংবদন্তি আন্দ্রে আগাসি এবং বিলিয়নেয়ার ফিল নাইটের স্মৃতিকথাও লিখেছেন। মজার বিষয় হল ২০০৫ সালে ‘ দ্য টেন্ডার বার’ নামে নিজের স্মৃতিকথাও লিখেছেন মোরিনার। ২০২১ সালে তা নিয়ে ছবি বানান জর্জ ক্লুনি। তাতে অভিনয় করেন বেন অ্যাফ্লেক। এই মোরিনারের অসাধারণ লেখনিও যে প্রিন্স হ্যারির বইকে অন্য মাত্রায় নিয়ে গেছে তা বলাই বাহুল্য।
[ছবি সৌজন্যঃ খোশখবর সাইটে ব্যবহৃত ছবিগুলি নেওয়া হয়েছে পিক্সাবে, আনস্প্ল্যাস, ফ্রিপিক, উইকিমিডিয়া কমন্স, গুগল ফটো সহ বিভিন্ন নিজস্ব সূত্র থেকে]
[ জ্ঞান বা তথ্যের কোনও কপিরাইট হয় বলে আমরা মনে করি না। পৃথিবীর বুকে প্রকাশিত অগুনতি বই, লাইব্রেরিতে ঠাসা সমুদ্র সমান জ্ঞান, অন্তর্জালে ছড়িয়ে থাকা আকাশ সমান তথ্য থেকে দু-একটি তুলে এনে পাঠকদের সামনে রাখাই এই ব্লগসাইটের কাজ।তবে জ্ঞানত কোনও ভুল,বিকৃত বা অন্ধ ভাবনার তথ্য প্রকাশ করবে না ‘খোশখবর’।]
0 মন্তব্যসমূহ