একনজরে

10/recent/ticker-posts

Singapore forest town সভ্যতার বিপদ আসন্ন! সিঙ্গাপুরে গড়ে উঠছে চিরসবুজ বনের শহর

নতুন অরণ্য নগরীতে সবকিছুই হবে পরিবেশবান্ধব। নিষিদ্ধ থাকবে এসির ব্যবহার। সৌরবিদ্যুৎতে চলবে সেখানকার নগরজীবন।

খোশখবর ডেস্কঃ দাও ফিরে সে অরণ্য, লও এ নগর - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁর ‘সভ্যতার প্রতি’ কবিতায় সেই কবেই বলে গেছেন অত্যাধুনিক জীবনযাত্রার দমবন্ধ পরিবেশের কথা। সেই অরণ্যের কাছে ফিরতেই অরণ্য জনপদ বানাচ্ছে কসমোপলিটন সিঙ্গাপুর। সিঙ্গাপুরের হাউজিং অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট বোর্ড –এর এই প্রকল্পের পোশাকি নাম 'দ্য তেনগা প্রজেক্ট'। তেনগার বিশাল অরণ্যভূমির উপরেই গড়ে উঠছে অরণ্য নগরী। ৭০০ হেক্টর জমির উপর ৫টি ডিস্ট্রিক্ট নিয়ে তৈরি এই শহরে তৈরি হবে ৪২ হাজার বাড়ি। নতুন অরণ্য নগরীতে সবকিছুই হবে পরিবেশবান্ধব। নিষিদ্ধ থাকবে এসির ব্যবহার। সৌরবিদ্যুৎতে চলবে সেখানকার নগরজীবন।



প্লান্টেশন ডিস্ট্রিক্ট

প্রায় ৯০ হেক্টর এলাকা নিয়ে তৈরি হবে প্লান্টেশন ডিস্ট্রিক্ট। সম্পূর্ণরূপে তৈরি হলে এখানে প্রকৃতি ঘেরা সবুজে থাকবে বসবাসযোগ্য প্রায় ১০,০০০ নতুন বাড়ি।

গার্ডেন ডিস্ট্রিক্ট

চারিদিকে থাকবে শুধু সবুজ আর জল।প্রকৃতির মধ্যেই বাস হবে মানুষের।গার্ডেন ডিস্ট্রিক্ট সম্পূর্ণরূপে সম্পন্ন হলে তার পেটের ভেতর ৬৫০০টি নতুন বাড়ি রাখা হবে বলে অনুমান।

পার্ক ডিস্ট্রিক্ট

'দ্য তেনগা প্রজেক্ট' –এর একেবারে কেন্দ্রে থাকবে পার্ক ডিস্ট্রিক্ট।সবুজে মুড়ে এখানে হবে তেনগা টাউন সেন্টার।এই এলাকা হবে গাড়ি মুক্ত।সম্পূর্ণরূপে শেষ হলে প্রায় ৭২০০টি বাড়ি থাকবে এই প্রকৃতিঘেরা অত্যাধুনিক এলাকায়।

ফরেস্ট হিল ডিস্ট্রিক্ট টাউন

নাম শুনেই বোঝা যাচ্ছে এই অঞ্চল হবে বন আর পাহাড়ের কোলে।'প্রকৃতির মাঝে বেঁচে থাকার' এক সেরা অভিজ্ঞতা দেবে এই সবুজে ঘেরা করিডোর - ফরেস্ট হিল ডিস্ট্রিক্ট টাউন।

ব্রিকল্যান্ড ডিস্ট্রিক্ট

প্রকল্পের এই এলাকায় আগে ছিল ইট তৈরির কারখানা। বন-জঙ্গলের মাঝে তেনগার সেই শিল্পের অতীতকে বাঁচিয়ে রেখেই তৈরি হবে মানুষের থাকার জায়গা।


অনেকেই মনে করছেন প্রকৃতির উপর মানুষের অতিরিক্ত আগ্রাসনই ডেকে আনছে বিপদ। করোনাকালই মানুষকে বুঝতে শিখিয়েছে প্রকৃতির বিরুদ্ধে নয়,তাকে সঙ্গে নিয়েই বাঁচতে শেখার কথা।তাই তেনগা হতে চলেছে ভবিষ্যতের শহর।এই প্রকল্প আরও স্মার্ট, আরও টেকসই – যা ভবিষ্যতের মানুষকে বাসযোগ্য এবং নিরাপদ পরিবেশ তৈরি করতে সাহায্য করবে।

স্মার্ট বাড়ি

প্রতিটি বাড়ি হবে পরিবেশ বান্ধব। জীবন হবে প্রকৃতির আলো জল বাতাস নির্ভর।সোলার এনার্জিই হবে পরিবারের শক্তি ব্যবহারের মূল উৎস। থাকবে স্মার্ট ডিস্ট্রিবিউশন বোর্ড। বাড়ির ছাদে সোলার প্যানেলের মাধ্যমে সংগৃহীত সৌর শক্তি দিয়েই চলবে সব কাজ।

চলবে বৈদ্যুতিক গাড়ি/ থাকবে গাড়ি পার্ক

একমাত্র ইলেকট্রিক গাড়িই চলবে। প্রতিটি গাড়ি পার্কের বিভিন্ন লটে থাকবে ই ভি চার্জিং পয়েন্ট। আর এই চার্জিং পয়েন্ট চলবে সৌর শক্তি দিয়ে। আসলে তেনগায় যারা থাকবেন তাদের ব্যক্তিগত গাড়ি থাকবে না। ইলেকট্রিক গাড়ির গণ পরিবহনেই তাদের চলতে হবে।তবে ব্যক্তিগত ব্যবহারের জন্য থাকবে সাইকেল।

স্মার্ট আলো

তেনগার বিভিন্ন এলাকায় থাকবে স্মার্ট লাইটিং। থাকবে সেন্সর। প্রয়োজন অনুসারে আলো ধীরে ধীরে উজ্জ্বল হবে তারপরে ম্লান হবে। এই আলো প্রচলিত LED আলোর তুলনায় ৬০ শতাংশ বেশি শক্তি সঞ্চয় করতে সাহায্য করবে।

কুলিং সিস্টেম

বাড়ির বা ফ্ল্যাটের মধ্যে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে একটি সেন্ট্রালাইজড কুলিং সিস্টেম ব্যবহার করা হবে। বাসিন্দারা একটি অ্যাপের মাধ্যমে ঘরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন।


পরিবেশ ধ্বংস করে একের পর এক শহর গড়ার মাসুল দিচ্ছে পৃথিবীর মানুষ। ফি বছর জলবায়ু সম্মেলন করে নিজেদের ও পৃথিবীকে বাঁচানোর দিশা খুঁজতে হচ্ছে। তা থেকে শিক্ষা নিয়েই গড়ে তোলা হচ্ছে তেনগার মত ‘একটি চিরসবুজ বনের শহর’। ২০৩০ থেকে ২০৫০-এর মধ্যে শেষ হতে চলা সেই অরণ্য নগরীর দিকেই তাকিয়ে আগামীদিনের মানুষ।

তথ্যসূত্রঃ সিঙ্গাপুর হাউজিং ডেভেলপমেন্ট বোর্ড ওয়েবসাইট/ ইনসাইডহুক ডট কম/ মাইতেনগা ডট এসজি/সিএনএন নিউজ / 
ছবি - শিল্পীর কল্পনায়  

                        [ছবি সৌজন্যঃ খোশখবর সাইটে ব্যবহৃত ছবিগুলি নেওয়া হয়েছে  পিক্সাবে, আনস্প্ল্যাস, ফ্রিপিক, উইকিমিডিয়া কমন্স, গুগল ফটো সহ বিভিন্ন নিজস্ব সূত্র থেকে]  

[জ্ঞান বা তথ্যের কোনও কপিরাইট হয় বলে আমরা মনে করি না। পৃথিবীর বুকে প্রকাশিত অগুনতি বইলাইব্রেরিতে ঠাসা সমুদ্র সমান জ্ঞান,অন্তর্জালে ছড়িয়ে থাকা আকাশ সমান তথ্য থেকে দু-একটি তুলে এনে পাঠকদের সামনে রাখাই এই ব্লগসাইটের কাজ।তবে  জ্ঞানত কোনও ভুল,বিকৃত বা অন্ধ ভাবনার তথ্য প্রকাশ করবে না ‘খোশখবর

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ

Ad Code