ইমিউনিটি পাওয়ার বাড়াতে কোন কোন খাবারগুলো অবশ্যই খাওয়াবেন
খোশখবর ডেস্কঃ করোনা কালেই আমরা জেনেছি যে ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই করতে অন্যতম হাতিয়ার হল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা। যার শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা যত বেশি, সে তত ভালো রোগের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সক্ষম হবে এবং সংক্রমণের ঝুঁকিও কমবে।তাই নিজেদের পাশাপাশি শিশুদের ও ছোটদের ইমিউনিটি পাওয়ার বাড়ানোর দিকে নজর রাখুন এখন থেকেই।
ছোটদের এমন খাবার দিতে হবে যা তার বৃদ্ধির পাশাপাশি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির ক্ষেত্রে খুবই কার্যকর হয়। বাচ্চাদের বেশি করে ফল এবং শাকসবজি খাওয়ানো খুব প্রয়োজন। এসবে ভিটামিন, খনিজের পাশাপাশি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান মেলে। চলুন দেখে নিই আপনার বাচ্চার ইমিউনিটি পাওয়ার বাড়াতে কোন কোন খাবারগুলো অবশ্যই খাওয়াবেন।
বাচ্চাদের খাদ্য তালিকায় কি কি রাখবেন?
শাক-সবজি
পৃথিবীর প্রায় কোনও বাচ্চাই শাকসবজি খেতে পছন্দ করে না।কিন্তু, দেহে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়তে শাক সবজি খাওয়া সবার আগে দরকার। এই সময়ে শিশুদের সুস্থ রাখতে এবং দেহের রোগ প্রতিরোধ শক্তিকে শক্তিশালী করতে প্রত্যেক দিনের খাবারের তালিকায় রাখুন শাকসবজি। কচুর শাক, লালশাক, পালংশাক, বিট, লেটুসপাতা খুবই উপকারী।কাঁচা পেঁপে পরিপাক শক্তির সহায়ক। পাতে দিন ধনেপাতা ও পুদিনাপাতা। গ্রীষ্মকালের সবজি হিসেবে ঝিঙে, চিচিঙ্গা, চালকুমড়া খুব উপকারি।
মাছ,মাংস,ডিম
মানুষের শরীরে প্রোটিনের প্রয়োজনীয়তা বিপুল। স্বাস্থ্যের যথাযথ সুরক্ষার জন্য মেনুতে প্রোটিন, কার্বোহাইড্রেট, ফ্যাটের সমতা থাকা অতন্ত্য প্রয়োজনীয়। প্রোটিন সমৃদ্ধ পুষ্টিকর খাবারের নিয়মিত প্রয়োজন। এতে প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে। ভাইরাসের সঙ্গে লড়াই করা সম্ভব হয়। মাছের প্রোটিন খুব সহজপাচ্য। অনেক মাছের প্রোটিনের পরিমাণ প্রায় মাংসের সমান। মাছের মুড়োতে বেশি ক্যালসিয়াম থাকে। ছোট মাছ যেমন মৌরলা, ফেঁসা, ট্যাংরা, চাঁদা, প্রভৃতি, যাদের নরম কাঁটা - তার মধ্যে ৯৮ ভাগই ক্যালসিয়াম থাকে। ডিমে প্রোটিন, স্নেহ পদার্থ ও ভিটামিন ‘এ’ ও ‘ডি’ প্রচুর পরিমাণে থাকে। মুরগীর মাংস নরম ও সহজপাচ্য। মুরগীর মেটেতে প্রায় সব রকম ভিটামিনই পাওয়া যায়। ফলে সুযোগ মত বাচ্চাদের খাবারে রাখুন মাছ,মাংস,ডিম।
ফল
ফল আমাদের স্বাস্থ্যের জন্যে খুবই উপকারী। প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় যেকোন ধরণের একটি ফল অবশ্যই থাকা উচিৎ।প্রতিটি ফলে থাকে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, যা শরীরের খারাপ ব্যাকটেরিয়াগুলোর বিপরীতে কাজ করে থাকে। নিয়মিত ফল খেলে আপনার শরীরে সহজেই রোগ দানা বাধতে পারবে না। ফল আমাদের শরীরে বিভিন্ন রকম ভিটামিন এবং মিনারেল এর ঘাটতি পূরণ করে থাকে। ফলে আপনার বাড়ির বাচ্চার হাতে প্রতিদিন তুলে দিন অন্তত একটি মরশুমি ফল।
দুধ
দুধ একটি আদর্শ খাবার। দুধ বা দুধ জাতীয় খাদ্যদ্রব্য শিশুদের জন্য খুবই প্রয়োজনীয়৷ ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, ম্যাগনেসিয়াম, প্রোটিন হাড়কে মজবুত আর শক্তিশালী করতে যা যা প্রয়োজনীয়, দুধ আমাদের সেই সব চাহিদাই মেটায়৷ দুধ অনেক রোগ প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে৷ দুধে ক্যালসিয়াম এবং ফসফরাসের উপস্থিতি আমাদের দাঁতের সুরক্ষায় সাহায্য করে৷ তাইতো মিছিমিছি আপনার সন্তানকে বলেই দিন - দুধ না খেলে, হবে না ভালো ছেলে!
দই
দই ইমিউন সিস্টেমকে বাড়িয়ে তোলে। দই দেহের খারাপ ব্যাকটেরিয়াগুলোকে ধ্বংস করতে সহায়তা করে।দইয়ে উপস্থিত উপকারী ব্যাকটেরিয়া শরীরে প্রবেশ করার পর রোগ প্রতিরোধব্যবস্থাকে এতটাই শক্তিশালী করে দেয় যে সংক্রমণ থেকে ভাইরাল ফিবার, কোনো কিছুই ধারেকাছে ঘেঁষতে পারে না। ফলে দই বাচ্চার ইমিউন সিস্টেমকে বাড়িয়ে তোলে। তাই পারলে বাড়ির বাচ্চা ও শিশুদের রোজ খাবারের পর দই খাওয়ান।
আমন্ড
ভিটামিন আর নানা রকম খনিজ সমৃদ্ধ ভিটামিন আমন্ড যে আমাদের শরীরের জন্য খুব উপকারী। ভিটামিন ও প্রোটিনে পরিপূর্ণ থাকে আমন্ড। এতে রয়েছে অ্যান্ট অক্সিডেন্ট ও জিরো কোলেস্টেরল। প্রতিদিন সকালে ২টি থেকে ৩টি আমন্ড দিতে পারেন আপনার বাচ্চাকে।
কাজুবাদাম
পুষ্টিগুণ এবং শরীরিক উপকারিতার দিক থেকে কাজু বাদামের কোনও বিকল্প হয় না। এতে উপস্থিত প্রোটিন, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, কপার, ক্যালসিয়াম সহ নানাবিধ খনিজ এবং ভিটামিন নানাভাবে শরীরের উপকারে লেগে থাকে। আয়রনে পরিপূর্ণ কাজুবাদাম স্বাস্থ্যের প্রকৃত বন্ধু। এতে রয়েছে ম্যাগনেশিয়াম, জিঙ্ক ও ফসফরাস। এই বাদাম নিয়মিত খেলে হাড়ের শক্তি বাড়ে।
ডালজাতীয় খাবার
ডাল হল উদ্ভিজ্জ প্রোটিনের খুব ভালো উৎস। ডাল নানা রকম খনিজ ও পুষ্টি উপাদান সমৃদ্ধ হওয়ায় তা শরীর সুস্থ রাখতে সহায়তা করে। ডাল শরীরে প্রোটিনের চাহিদা পূরণ করে। ফলে আপনার শিশুটির জন্য বাড়িতেই বানিয়ে ফেলুন হরেক রকমের ডালের উপাদেয় রান্না। হালুয়া, খিচুড়ি, বিভিন্ন সবজির সঙ্গে ডালের প্রিপারেশন আপনার বাচ্চার খাবার ইচ্ছে বাড়িয়ে তুলবে।
ছবি সৌজন্যঃ পিক্সাবে
[জ্ঞান বা তথ্যের কোনও কপিরাইট হয় বলে আমরা মনে করি না। পৃথিবীর বুকে প্রকাশিত অগুনতি বই, লাইব্রেরিতে ঠাসা সমুদ্র সমান জ্ঞান,অন্তর্জালে ছড়িয়ে থাকা আকাশ সমান তথ্য থেকে দু-একটি তুলে এনে পাঠকদের সামনে রাখাই এই ব্লগসাইটের কাজ।তবে জ্ঞানত কোনও ভুল,বিকৃত বা অন্ধ ভাবনার তথ্য প্রকাশ করবে না ‘খোশখবর’।]
0 মন্তব্যসমূহ