একনজরে

10/recent/ticker-posts

সাইক্লোন,টাইফুন,হারিকেন ঝড় আসে কোথা থেকে?


খোশখবর ডেস্কঃ আবহাওয়াবিদদের ব্যাখ্যা অনুসারে - টাইফুন, সাইক্লোন বা হারিকেন এগুলোর সবই সমুদ্রে উষ্ণ জলীয় অঞ্চলে গভীর নিম্নচাপের ফলে তৈরি হওয়া ঘূর্ণিঝড়। আসলে একই ধরনের ঝড়ের আলাদা আলাদা নাম। বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, ঝড়ের কারণ ও বৈশিষ্ট্য এক থাকা সত্ত্বেও মূলত অঞ্চল ও সময়কাল ভেদে আন্তর্জাতিক তারিখ রেখার ওপর ভিত্তি করে ঘূর্ণিঝড়গুলোকে পৃথক নামে ডাকা হয়।


ভারত মহাসাগরের উত্তর ও দক্ষিণ অংশ, দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগর অঞ্চল, বঙ্গোপসাগর অথবা আরব সাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড়গুলোকে অভিহিত করা হয় ‘সাইক্লোন’ নামে। অন্যদিকে সেসব ঘূর্ণিঝড় উত্তর আটলান্টিক, উত্তর- পুর্ব প্রশান্ত মহাসাগর, ক্যারিবিয়ান সমুদ্র ও মেক্সিকো উপসাগরীয় অঞ্চলে উৎপন্ন হয় সেগুলোকে বলা হয় ‘হ্যারিকেন’।আবার উত্তর-পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগর অঞ্চলঘেঁষা এশিয়ায়(চিন,জাপানের আশেপাশে) সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড়গুলোকে বলা হয় ‘টাইফুন’। অর্থাৎ কোনো ঘূর্ণিঝড় আন্তর্জাতিক তারিখ রেখা অতিক্রম করে পূর্বে বা পশ্চিমে গেলে তার নামও বদলে যায়। ঘূর্ণিঝড়গুলো সমুদ্রের বাষ্পীভূত জল থেকে শক্তি সঞ্চয় করে এবং ভূমিভাগে আঘাত করার পর ধীরে ধীরে দুর্বল হয়ে পড়ে। তবে শক্তি নিঃশেষ হওয়ার আগে পর্যন্ত এসব ঝড় স্থলপথে অনেক দূর পর্যন্ত ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি, বৃষ্টিপাত ঘটায়।

সাইক্লোন শব্দটি এসেছে গ্রিক শব্দ কাইক্লোস থেকে, যার অর্থ বৃত্ত বা চাকা। এটা অনেক সময় সাপের বৃত্তাকার কুন্ডলী বোঝাতেও ব্যবহৃত হয়। অন্যদিকে মায়া দেবতা(ঝড়ের দেবতা) হুরাকান থেকেই হারিকেন শব্দটি এসেছে বলে মনে করা হয় । তেমনই, চীনা শব্দ টাই-ফেং থেকে এসেছে টাইফুন শব্দটি, যার অর্থ প্রচন্ড বাতাস। অনেকে মনে করেন ফার্সি বা আরবি শব্দ তুফান থেকেও টাইফুন শব্দটি আসতে পারে।
তীব্রতা অনুসারে সব ঝড়কেই বিভিন্ন ভাগে ভাগ করা হয়। ঝড়ের বেগ ঘণ্টায় ৬২-৮৮ কিমি হলে তাকে সাইক্লোনিং স্টর্ম বলা হয়। ঝড়ের বেগ ঘণ্টায় ৮৯ থেকে ১১৭ কিমি হলে, সিভিয়ার সাইক্লোন। ঝড়ের বেগ ঘণ্টায় ১১৮-১৬৬ কিমি হলে ভেরি সিভিয়ার সাইক্লোন। ঝড়ের বেগ ঘণ্টায় ১৬৭-২২১ কিমি হলে তাকে এক্সট্রিমলি সিভিয়ার সাইক্লোন বলা হয়। ঝড়ের বেগ ঘণ্টায় ২২২ কিমি বা তার থেকে বেশি হলে তাকে সুপার সাইক্লোন বলে। তবে ভয়াবহ হলেও মেরু অঞ্চলের দিকে উষ্ণ অঞ্চলের তাপ বয়ে নেওয়ার মধ্য দিয়ে টাইফুন, সাইক্লোন, ও হারিকেনসহ বিভিন্ন সামুদ্রিক ঘূর্ণিঝড় বিশ্বের সার্বিক আবহাওয়ার ভারসাম্য বজায় রাখতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ

Ad Code